যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০২২ আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন, নাম নেই বাংলাদেশের

আর্থিক স্বচ্ছতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ন্যূনতম কোনো শর্ত পালনকারী দেশগুলোর তালিকায় নাম নেই বাংলাদেশের। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০২২ সালের আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে (FTR) এ কথা জানানো হয়েছে। তবে শর্তপূরণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আরও উন্নতি করার জন্য বাংলাদেশকে চারটি সুপারিশও করা হয়েছে

শর্ত পূরণে ২৭টি দেশ লক্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে

গতকাল শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষসহ চলতি বছর ১৪১ দেশের সরকারের মাঝে ৭২টি আর্থিক স্বচ্ছতার নাম মাত্র শর্ত পালন করেছে। বাকি ৬৯টি দেশ ন্যূনতম কোনো শর্ত পালন করতে পারেনি। তবে এসব শর্ত পূরণে ২৭টি দেশ লক্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।

আর্থিক স্বচ্ছতার মানদণ্ডে উন্নত হয়েছে ভারত

দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের এই আর্থিক স্বচ্ছতার মানদণ্ডে উন্নত হয়েছে ভারত, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা। অপরদিকে বাংলাদেশের কাতারে রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং মালদ্বীপ। একই অবস্থা মিয়ানমার সরকারেরও।

মন্ত্রণালয়গুলোর উপার্জন-খরচসহ বাজেটের তথ্যের পর্যাপ্ততা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহনের জন্য সরকারের নানা চুক্তি ও নিবন্ধন দেওয়ার প্রক্রিয়ার স্পষ্টতা নিরূপণ করে প্রতিবেদনটি প্রস্তুুত করা হয়।

যথা সময়ে প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রদর্শন না করা

প্রতিবেদনে সরকারি উপার্জন-খরচসহ নিরীক্ষায় বাস্তব চিত্র উঠে না আসাকে বাংলাদেশের আর্থিক অস্বচ্ছতার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে জানানো হয়, সরকারি উপার্জন-খরচসহ হিসাব অনুসন্ধান করে থাকে নিরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বাস্তব চিত্র প্রতিফলিত হয় না। যথা সময়ে এ প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রদর্শন করা হয় না।

বার্ষিক প্রতিবেদন প্রদর্শন করে লক্ষণীয় অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ

তবে বাংলাদেশের পারদর্শিতার ব্যাপারে প্রতিবেদনে জানানো হয়, সরকার একটি যুক্তিযুক্ত সময়ের ভিতর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রদর্শন করে লক্ষণীয় অগ্রগতি করেছে। নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও পাস হওয়া বাজেটের তথ্যও সরকার অনলাইনসহ বিভিন্ন উপায়ে সহজ ভাবে পাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। ঋণের দায়সংক্রান্ত তথ্যও যথেষ্ট পাওয়া যায়।

অবশ্য রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বাজেটের দেওয়া তথ্য সাধারণত বিশ্বাসযোগ্য বিবেচনা করা হয়, যদিও বাজেটের কাগজপত্র আন্তর্জাতিক মানদন্ড নীতি মেনে তৈরি করা হয়নি।

বাংলাদেশের জন্য চার সুপারিশ

প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের আর্থিক স্পষ্টতা বৃদ্ধিতে চারটি সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলোঃ-

  • আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নীতি মেনে বাজেটের কাগজপত্র তৈরি করা।
  • সিএজি স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড সুনিশ্চিত এবং যথেষ্ট জনবলের ব্যবস্থা করা।
  • বাস্তব চিত্র, সুপারিশসহ বিস্তারিত নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপযুক্ত সময়ে প্রকাশ।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহে সম্পাদিত চুক্তির মৌলিক তথ্যগুলো জনসম্মুখে ও সঙ্গতিপূর্ণ ভাবে প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ।

সূত্র: প্রথম আলো 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *