প্রণোদনা বিশেষ সুবিধা । এটি মূল্যস্ফিতির সাথে কতটা গ্রহণযোগ্য হল?

“প্রণোদনা” বা “বিশেষ সুবিধা” যাই বলি না কেন, এটি দেয়া হচ্ছে মূলতঃ পেস্কেল দেয়ার পর দীর্ঘ ৮বছরের ব্যবধানে দ্রব্যমূল্যের ক্রম বৃদ্ধিজনিত মূল্যস্ফীতির সমন্বয় করার জন্য– প্রণোদনা বিশেষ সুবিধা

প্রনোদনা বা বিশেষ সুবিধা কি কর্মচারী বান্ধব হলো? না। সকল কর্মচারীদের মোট বেতন ১০০০ টাকা বাড়বে। এটি তাদের বাজার চাহিদা বা দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে না। বিশেষ সুবিধা নামে চালু করা ভাতা কর্মচারী নয় বরং একটি এলিট শ্রেণীর জন্য সুবিধা বয়ে আনছে। নিম্নগ্রেডের কর্মচারীদের জন্য এটি বিশেষ কোন ভূমিকা রাখবে না।

আর বাজারে দ্রব্যমূল্য যেহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেটি নিশ্চয়ই কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়, সেটি বাড়ছে নিশ্চয়ই সবার জন্য এবং সমহারেই। বাজারে ২০ গ্রেডের একজন কর্মচারি যে দামে চাউল, ডাল, তৈল, পিঁয়াজ, রসুন, লবন, মরিচ কিনছেন, আমার মতো একজন ১০ম গ্রেডের নগণ্য কর্মকর্তাই নয়, সেই চাউল, ডাল, তৈল, পিঁয়াজ, রসুন, লবন, মরিচসহ সকল দ্রব্য সরকারের উচ্চ পদস্থ সর্বোচ্চ পদধারী ১নং গ্রেডের একজন কর্মকর্তাও সেই একই দামেই কিনছেন। সুতরাং এই প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধা কারো জন্য ১,০০০/- টাকা, আর কারো জন্য ৪,০০০/- টাকা বাড়বে, এটা কোনভাবেই ইনসাফসম্মত নয়। এটা সুস্পষ্টভাবেই ন্যায় বিচারের পরিপন্থী।

তবুও কোন না কোনভাবে এটা মেনে নেয়া যেতো, যদি না এই প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধা ঘোষণার পর বাজারে এর কোন প্রকারের প্রভাব না পড়তো।প্রসংগত, চলমান পেস্কেলে ১নং গ্রেডধারীর মূল বেতন ৭৮,০০০/- টাকা, আর ২০নং গ্রেডধারীর মূল বেতন ৮,২৫০/- টাকা, অর্থাৎ উভয় গ্রেডধারীর মধ্যে বর্তমান ব্যবধান ৬৯,৭৫০/- টাকা। সত্যিই সুক্ষভাবে চিন্তা করলে স্পষ্টতই মনে প্রশ্ন জাগে, এ বৈষম্যটা সত্যিই অত্যধিক এবং সীমাহীন হয়ে গেলো না? গভীরভাবে চিন্তা করলে এ বৈষম্যটা মেনে নেয়া সত্যিই কস্টদায়ক মনে হয়! আর যে কারণে দীর্ঘদিন থেকে এ বৈষম্য কমিয়ে আনার জন্যই কর্মচারি সংগঠনগুলোর এতো এতো ত্যাগ, আন্দোলন, সংগ্রাম, শ্রম, সাধনা। সূত্র দেখুন

কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন বৈষম্য থাকায় বিশেষ ভাতার ক্ষেত্রেও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। শুধু বেতন বৈষম্য দূর করা গেলে অন্যান্য সুবিধার বৈষম্যও দূর হবে

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণও পাবেন? – হ্যাঁ। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ ০১ জুলাই ২০২৩ হতে প্রতি বছর ০১ জুলাই তারিখে প্রাপ্য মূল বেতনের ৫ (পাঁচ) শতাংশ হারে, তবে ১,০০০ (এক হাজার) টাকার কম নয়, ‘বিশেষ সুবিধা প্রাপ্য হবেন। সরকারি কর্মচারীদের মতও এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও শিক্ষকগণও বিশেষ সুবিধা ভাতা পাবেন।

Special Benefit for MPO । এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণের জন্য ৫(পাঁচ) শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন

বৈষম্য কি বাড়লো?

সত্যিই ভাবুন তো, এই প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধার কারণে নিম্ন গ্রেডধারীকে যে ১,০০০/- টাকা বৃদ্ধি করা হলো, তার কারণে বাজারে কি ৫,০০০/- টাকার উপরে প্রভাব পড়বে না? আর ১নং ও ২০নং গ্রেডধারীর মূল বেতনের মধ্যকার ব্যবধানটাকে আরো (৩,৯০০-১,০০০)= ২,৯০০/- টাকা বাড়িয়ে দিয়ে বৈষম্যের চাকাটাকে কি আরো বাড়িয়ে দেয়া হলো না? দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিজনিত কারণে মূল্যস্ফীতির সমন্বয়ের লক্ষ্যে সদাশয় সরকার সদয় হয়ে যে প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করলেন, এটাতে কি এই বৈষম্য তথা ব্যবধানটাকে চরম থেকে আরো চরমে নিয়ে গেলো না? সংগত কারণেই প্রশ্ন জাগে, এই প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধা সত্যি কাদেরকে দেয়া হয়েছে কিংবা এই প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধা কি উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে? এটি কি চলমান বৈষম্যকে আরো একধাপ বৃদ্ধির জন্যই দেয়া হলো? সবশেষে একটা কথাই (একথা এখন আর বলে যদিও কোন লাভ নেই) বলে যাই- প্রণোদনা বা বিশেষ সুবিধা যাই দেন, সবাইকে সমপরিমাণে দিন, দয়া করে বৈষম্যটাকে আর বাড়াবেন না।

পোস্ট ক্রেডিট : Khorshed Alam 

admin

I am a web developer who is working as a freelancer. I am living in Tangail, Google SEO is a fantasy to me, I can help you to do your website promote in google first page by SEO Service. You can check me at technicalalamin.com

admin has 299 posts and counting. See all posts by admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *